৫ আগস্ট রাতে একটা গুজব ছড়ানো হয়েছিল—ভারত বাংলাদেশ দখল করে নিচ্ছে, ভারতীয় আর্মি সীমান্ত পেরিয়ে ঢুকে পড়েছে।
মানুষ আতঙ্কিত হয়ে পড়ে, সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয় সেই খবর।
কিন্তু আমি তখনই লিখেছিলাম—“ইন্ডিয়ান আর্মি ঢোকেনি, দখল হয়নি, আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই।”
অনেকে গালাগালি করেছিল, বিশ্বাস করেনি।
আজ প্রমাণ হয়ে গেছে, সত্যি কথা ছিল সেটা।
আমি সব বিষয়ে মত দিই না। শুধু তখনই বলি, যখন নিশ্চিত থাকি।
বন্দর নিয়ে এখন নতুন খেলা চলছে।
১৭ বছর ধরে চট্টগ্রাম বন্দর থেকে আওয়ামী লীগ ঘনিষ্ঠ কিছু কোম্পানি হাজার হাজার কোটি টাকা কামিয়েছে।
তাদের এই লুটপাটে এখন যুক্ত হচ্ছে বিএনপি, জামায়াত, এনসিপি, এমনকি বৈষম্যবিরোধী ব্যানারের আড়ালে থাকা চট্টগ্রামের কিছু প্রভাবশালীও।
আমার আগের পোস্টে জানিয়েছিলাম কীভাবে শেখ রেহানার ক্যাশিয়ার বন্দরকে “খেয়ে” ফেলেছে।
এখন সেই বন্দরের একটি টার্মিনালে সৌদি আরব প্রবেশ করেছে, এবং আরব আমীরাত ২৫ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের পরিকল্পনায় রয়েছে।
ডিপি ওয়ার্ল্ড (DP World) নামের একটি সংস্থা এখানে ব্যবসা করতে আসবে।
এই সংস্থাটি বিশ্বের ৭৯টি দেশে অপারেশন চালায়, বছরে প্রায় ৭০,০০০ ভেসেল এবং ৭ কোটি কন্টেইনার হ্যান্ডেল করে।
বিশ্ব কন্টেইনার ট্রাফিকের ১০% ডিপি ওয়ার্ল্ড একাই নিয়ন্ত্রণ করে।
এখন প্রশ্ন: ডিপি ওয়ার্ল্ড এলে কি বাংলাদেশে মার্কিন ঘাঁটি হবে?
এটা একেবারে ভিত্তিহীন এবং হাস্যকর দাবি।
ডিপি ওয়ার্ল্ড যুক্তরাষ্ট্র, চীন, পাকিস্তান, সৌদি আরব, কাতার, থাইল্যান্ডসহ বহু দেশে কাজ করে।
সব দেশেই কি তাহলে ইউএস মিলিটারী বেইস আছে?
এই গুজব ছড়ানোর পেছনে যারা আছে, তারা চায় না দুর্নীতি বন্ধ হোক।
কারণ—
বন্দরের কর্মচারী, যার বেতন ২ লাখ টাকা, সে ১০-২০ লাখ টাকা পাচ্ছে ঘুষ হিসেবে।
ঝাড়ুদারও কোটিপতি হয়ে গেছে।
এই অবৈধ টাকা দেয়ার পেছনে কোম্পানিগুলোর লস নেই—কারণ তারা প্রতিদিন শত কোটি টাকা চুরি করে।
ডিপি ওয়ার্ল্ড আসলে কী হবে?
- বাংলাদেশের রপ্তানি সরাসরি ৩৬টির বেশি দেশে যাবে।
- সিঙ্গাপুর হয়ে ঘুরে যেতে হবে না—সময় ও টাকা বাঁচবে।
- আন্তর্জাতিক মানে পোর্ট পরিচালনা হবে।
- দুর্নীতি কমবে, স্বচ্ছতা বাড়বে।
আমরা চীনকেও দিয়েছি মহেশখালী মাতারবাড়ী ডিপ সী পোর্ট।
তাহলে আরব আমীরাতকে নিয়ে এত আপত্তি কেন?
কারণ তারা চায় না, দেশে একটা স্বচ্ছ ও লাভজনক পোর্ট ম্যানেজমেন্ট চালু হোক।
আমি বিদেশী বিনিয়োগে না, বরং লুটপাটে আপত্তি করি।
যারা বিদেশী বিনিয়োগ মানেই দেশবিরোধী মনে করে, অথচ নিজেরা লুটের টাকা পাচার করে সেই বিদেশেই, তাদের নিয়ে প্রশ্ন তুলতে হবে।
আরব আমীরাত ব্যবসা করতে এলে সেটা লাভজনক হলে আমাদের দেশে রেমিট্যান্স আসবে, কর্মসংস্থান হবে, বন্দরের উন্নয়ন হবে।
বন্দর আমার দেশের সম্পদ—একটি রাজনৈতিক দলের ব্যক্তিগত সম্পত্তি নয়।
তাই যারা বিদেশী বিনিয়োগের বিরোধিতা করে দুর্নীতিকে টিকিয়ে রাখতে চায়, তাদের উদ্দেশ্য নিয়ে সন্দেহ করাই স্বাভাবিক।
বাংলাদেশ কারো ভিক্ষায় চলবে না, আবার কারো পকেটেও যাবে না।
স্বার্থ নিয়ে ভাবুন, গুজবে নয়—তথ্যে ভরসা রাখুন।
আপনি চাইলে এই লেখাটির একটি ইনফোগ্রাফিক বা সংক্ষিপ্ত ভিডিও স্ক্রিপ্টও তৈরি করে দিতে পারি। আপনি কোন প্ল্যাটফর্মে পোস্ট করবেন—ফেসবুক পেইজ, প্রোফাইল না ইউটিউব?
No comments:
Post a Comment