ইন্টারনেট ভিত্তিক তথ্য অনুসন্ধান সংস্থা গুগল ভূমির উপর অংশ থেকে এবার সমুদ্রের তলদেশের তথ্যচিত্র প্রদানে উদ্যোগী হয়েছে৷ তারা এই নতুন ওয়েবসাইটের নাম দিয়েছে ‘ওশান ইন গুগল আর্থ’৷
এতদিন তারা গ্রাহকদের ভৌগলিক চিত্র দিয়ে সহযোগিতা করছিল৷ গুগলের এই পরিষেবার মাধ্যমে মানুষ ঘরে বসেই সারা পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চলের পূর্ণ মানচিত্র হাতের নাগালে পেতে পারে৷ এমনকি ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র রূপ থেকে বৃহদাকার মানচিত্রে পৃথিবীর যে কোন অঞ্চল কিংবা গ্রামের পরিচয় পাওয়া সম্ভব এই ওয়েবসাইটের মাধ্যমে৷ ২০০৫ সালের জুন মাসে গুগল আর্থ চালু হওয়ার পর থেকে এই ওয়েবসাইটটি ৪০ কোটিরও বেশিবার ডাউনলোড করা হয়েছে৷ চার বছর আগে গুগল আর্থ এর পরিষেবা শুরু করার পর এখন গুগল আর্থ ভূমির মানচিত্র থেকে সমুদ্রের তলদেশের মানচিত্র তুলে ধরছে তার গ্রাহকদের কাছে৷ এই নতুন ওয়েবসাইটে সমুদ্র তলদেশের বিভিন্ন স্তরের ত্রিমাত্রিক রূপসহ মানচিত্র এবং মহাসমুদ্র সংশ্লিষ্ট তথ্য-উপাত্ত সহজেই পাওয়া যাবে৷
সম্প্রতি সানফ্রান্সিস্কোর বিজ্ঞান এ্যাকাডেমিতে গুগলের এই নতুন ওয়েবসাইটটি আনুষ্ঠানিকভাবে চালু করেন আমেরিকার সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট আল গোর৷ জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় অগ্রগামী যোদ্ধা আল গোর বলেন, গুগল আর্থের এই সংস্করণের মাধ্যমে এখন আমরা অতি সহজে সমুদ্রের অতল গভীরে অভিযান চালাতে পারবো এবং অনেক নতুন আবিষ্কার সম্ভব হবে৷ তিনি এটাকে একটি শক্তিশালী শিক্ষা উপকরণ হিসেবে অভিহিত করেন৷ তিনি বলেন, সারা পৃথিবীর মানুষ এই ওয়েবসাইটটি পরিবেশ সংক্রান্ত সংকট উত্তরণে কাজে লাগাবে বলে তিনি বিশ্বাস করেন৷
এই পরিষেবার মাধ্যমে গুগল আর্থ ব্যবহারকারীরা সমুদ্রের মানচিত্রে ক্লিক করলে ঐ অঞ্চলে বসবাসকারী সামুদ্রিক প্রাণী ও জীব জগতের ভিডিওচিত্র দেখতে পারবে৷ এই ওয়েবসাইটে সমুদ্র জগতের বিভিন্ন বিষয় ২০ টি স্তরে সাজানো রয়েছে৷ এতে মহাসমুদ্রের সবচেয়ে আলোচিত স্থানগুলোর স্থির এবং ভিডিও চিত্রগুলো সংযোজিত করা হয়েছে৷ এমনকি সমুদ্রের তলদেশে ঘুরে বেড়ানো কোন প্রাণীর পিছনেও ধাওয়া করা সম্ভব কৃত্রিম উপগ্রহ থেকে পাঠানো তার গতিবিধির ছবির উপর ভিত্তি করে৷
গুগল ম্যাপস এ্যান্ড আর্থ এর পরিচালক জন হ্যাংকে বলেন, সমুদ্র বিশেষজ্ঞ সিলভিয়া আর্ল এক অনুষ্ঠানে ক্যালিফোর্নিয়ার একটি ইন্টারনেট ভিত্তিক মানচিত্র দেখে গুগল আর্থ‘কে গুগল ডার্ট বা মাটির গুগল বলে অভিহিত করেছিলেন৷ কেননা তখন পর্যন্ত পৃথিবীর ৭১ শতাংশ জলসীমানা গুগল আর্থ-এর পরিধির বাইরে ছিল৷ আর্ল-এর এই মন্তব্যই গুগলকে নতুন করে মহাসমুদ্র নিয়ে কাজ করতে উৎসাহিত করেছে বলে জানিয়েছেন হ্যাংকে৷ সিলভিয়া আর্ল বলেন, সমুদ্র জগতকে গুগল অত্যন্ত অল্প সময়ে হাতের মুঠোয় নিয়ে এসেছে অথচ এই সমুদ্রকে বুঝতে আমার সময় লেগেছে ৫০ বছর৷ গুগলের বদৌলতে আমরা এখন বেশ পরিষ্কার বুঝতে পারি, যে পৃথিবী মূলত নীল৷ যদিও মানুষ পৃথিবীর রং সবুজ বলে মনে করে, আসলে নীল রং ছাড়া পৃথিবী দেখতে সবুজ মনে হতো না৷